The Widows of Malabar Hill
Author: Sujata Massey
Translator: Ashikur Rahman
বোম্বে, ১৯২১ সম্ভ্রান্ত জোরোস্ত্রিয়ান পরিবারের মেয়ে পারভীন মিস্ত্রি। অক্সফোর্ড ফেরত, বোম্বের একমাত্র নারী আইনজীবী। পারিবারিক ল ফার্মে সাহায্য করছে বাবাকে।
তিন বিধবা স্ত্রী আর অগাধ সম্পত্তি রেখে মারা গেলেন মিঃ ওমর ফরিদ। প্রয়াত মক্কেলের সম্পত্তির মীমাংসার দায়িত্ব চাপল মিস্ত্রি ল এর উপর। কাগজ ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে পারভীনের চোখে অদ্ভূত একটা ব্যাপার চোখে পড়ল- তিন বিধবাই তাদের সম্পত্তির অংশ দান করে দিতে চাইছে। সদ্য স্বামী হারা স্ত্রীদের এহেন আচরণে খটকা লাগে ওর। যেখানে পর্দার আড়ালে বাস করা নারীদের অবলম্বন বলতে কিছুই নেই, কেন তারা কপর্দকহীন হয়ে যেতে চাইছে? পিছন থেকে কলকাঠি নাড়ছে না তো কেউ?
নিজে গিয়ে খোঁজ নেবে- সিদ্ধান্ত নিলো ও। আর তারপরেই ঘটতে শুরু করলো ঘটনা- খুন হয়ে গেলো ফরিদ হাউজের এক সদস্য, হারিয়ে গেলো এক শিশু।
এদিকে পারভীনকে তাড়া করে ফিরছে ওর অতীত। বর্তমানে এসেও হানা দিচ্ছে সেই ফেলে আসা স্মৃতি।
কোনদিক আগে সামলাবে ও?
৳ 450 ৳ 338
237 in stock
Book Details
Author | Sujata Massey |
---|---|
Translator | Ashikur Rahman |
Cover Designer | Adnan Ahmed Rizon |
Language | Bangla |
ISBN | 9789849405283 |
Page Number | 326 |
Release Date | February 2018 |
Ahnaf Tahmid –
রা যারা রহস্যের সাথে ইতিহাসও পছন্দ করেন, তারা দ্য উইডোজ অব মালাবার হিল বইটি হাতে তুলে নিতে পারেন নির্দ্বিধায়। কেন? তাহলে একটু গল্পের পটভূমিতে যাওয়া যাক-
সম্ভ্রান্ত জোরোস্ত্রিয়ান পরিবারের মেয়ে পারভীন মিস্ত্রি। তবে কেবল সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে হিসেবেই যে ওর পরিচয়, তা কিন্তু নয়। যোগ্য বাবার উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেছে সমাজের চোখে। অক্সফোর্ড থেকে পড়াশোনা করে হয়ে এসেছে বোম্বের প্রথম নারী আইনজীবী। তবুও সমাজের চোখে কেবল একজন “নারী” হবার অপরাধে আদালতে গিয়ে মক্কেলের হয়ে বিচারকার্য চালাবার লাইসেন্স এখনও পায়নি মেয়েটা। সে যাক গে। পারিবারিক ল’ ফার্মেই বাবার সাহায্যকারী হিসেবে কেসের দায়িত্ব পালন করছে পারভীন।
ঠিক এমন এক সময় বাবা জামশেদ মিস্ত্রির কাছে এলো অদ্ভুত এক কেস। অগাধ সম্পত্তি রেখে মারা গিয়েছেন মক্কেল ওমর ফরিদ। আর রেখে গিয়েছেন তিন বিধবা। সাধারণত সতীনদের মাঝে যেমনটা দেখা যায়, ওদের তিনজনের মাঝে তেমন সমস্যা নেই। মিলেমিশেই আছে বলা চলে। তবে একটা বিষয়ে খটকা লাগে পারভীনের। তিনজনই কেন তাদের প্রাপ্য সম্পত্তি দান করে দিতে চাইছে?
পর্দানশীন মুসলিম নারীদের সাহায্য করার জন্য মাঠে নামল ও। বাঁধা পেলো বিধবাদের সম্পত্তির দেখভাল করনেওয়ালা মুকরি সাহেবের। তবে বেশিদিন সমস্যা নিয়ে যুঝতে হলো না ওকে। খুন হয়ে গেল মুকরি সাহেব। কে তাকে খুন করল? জমাট বাঁধল রহস্য। তাছাড়া পারভীনের অতীতও তাড়া করে ফিরছে ওকে। ভালোবেসে বিয়ে করা পুরুষের ঘর কেন ছাড়তে বাধ্য হলো পারভীন? আমিনা মেয়েটা সত্যিই বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে নাকি বিশাল বাড়িটায় মুকরি সাহেবের পর আরও একজনের লাশের দেখা পাওয়া যাবে?
একা কতদিক সামলাবে পারভীন মিস্ত্রি?
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
রহস্যে ঘেরা হলেও বইটা একটু ধীরগতির। তবে এতটুকুও বিরক্তি আসবে না পড়তে গেলে। পারভীন মিস্ত্রির জীবনের সাথে আষ্টে-পৃষ্ঠে জড়িয়ে যেতে আপনি বাধ্য। পার্সি আইন, তৎকালীন সময়ে বিবাহিতা নারীদের মাসিকের সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন কেমন ব্যবহার করে, সামাজিক অবস্থান, মেয়েদের কতটা সমস্যা পোহাতে হয় সবকিছুই সুজাতা ম্যাসি খুব চমৎকার করে বর্ণনা করেছেন। সবচেয়ে ভালো লাগবে জামশেদ মিস্ত্রির মেয়ের প্রতি আচরণ। পারভীন ভালোবেসে বিয়ে করে সাইরাসকে। দোনোমনা করলেও বিয়েতে রাজি হয়ে যান তিনি। এরপর পারভীন স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে এলেও জামশেদ সাহেব মাথা ঠাণ্ডা করে রাখেন। মেয়ের সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার না করে তাকে নানা বিষয় নিয়ে বুদ্ধি দেন। জীবনের পরবর্তী ধাপে কীভাবে সে যাবে, তা নিয়েও ব্যবস্থা করে রাখেন। কোর্টরুমে মেয়ের অধিকার আদায়ের জন্য একজন পিতা কীভাবে লড়াই করেন, সেটা পড়তে গেলে আপনার মন আনন্দে ভরে উঠবে। সবচেয়ে অবাক করার বিষয় হলো, বইটির প্রেক্ষাপট বিশের দশক হলেও একবিংশ শতাব্দীতে নারীদের প্রতি সমাজের আচরণ এখনও আগের মতোই আছে। যতই নারী অধিকার নিয়ে গলা ফাটাই না কেন, আজও কিন্তু নারীরা সমাজের অনেকক্ষেত্রেই অবহেলিত। আর সে সাথে রহস্যে ঘেরা একটা সমস্যা পারভীন মিস্ত্রির হাতে তো আছেই! তাছাড়া অতীতের কিছু ভুল শোধরাতে গিয়ে সে নিজেকে হারিয়ে ফেলেনি একেবারেই। বরং বলা যায় ফিনিক্স পাখির মতোই ছাইভস্ম থেকে নতুনভাবে জন্ম নিয়েছে। প্রতিটা সমস্যার সমাধান করেছে উপস্থিত বুদ্ধি আর যুক্তির সাহায্যে। তা সে পারিবারিক হোক, কিংবা কেস সংক্রান্ত বিষয়ই হোক।
তৎকালীন সময়ে সম্ভ্রান্ত পর্দানশিন মুসলিম নারীদের জীবনে কঠোর পর্দাপ্রথা কীভাবে মানা হতো, তাদেরকে নিয়ে সমাজের নানা আলোচনা ইত্যাদি বিষয়ও বেশ চমৎকার ভাবে উঠে এসেছে। মূলত, বইটি থ্রিলার ঘরানার একেবারেই নয়। কোনো রোলার কোস্টার রাইডও এতে নেই। আইনের কিছু মারপ্যাচ আছে, পারিবারিক কিছু জটিলতা আছে। আর আছে একটা খুনের রহস্যভেদ। একটুর জন্যও আপনি বিরক্ত হবেন না। তবে আপনার যদি মারমার-কাটকাট রহস্যোপন্যাস পছন্দ হয়, এই বই থেকে দূরে থাকলেই ভালো করবেন।
বইটি পারভীন মিস্ত্রিকে নিয়ে আবর্তিত হলেও আমার সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র জামশেদ মিস্ত্রি। একজন বাবার এভাবেই উচিত জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মেয়ের পাশে থাকার।
নিজের কিছু কথাঃ
বইটি পড়ে অনেক কিছু জেনেছি। চলচ্চিত্র কিংবা টিভি সিরিজের বদৌলতে পার্সিদের নিয়ে অনেক আগ্রহ ছিল। তার সবটুকু না হলেও অনেক কৌতূহলই মিটিয়েছে এই বইটি। তবে ব্যক্তিগতভাবে বলতে গেলে একটা কথা বলতে হয়। যখনকার কথা বলা হয়েছে এই বইতে, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। সারা দুনিয়ার অবস্থাই টালমাটাল। ভারত কিংবা যুক্তরাজ্যেও এর প্রভাবের বাইরে নয়। বরং বলা যায় প্রত্যক্ষ প্রভাবটাই বেশি। এই জায়গাটা লেখিকা এড়িয়ে গিয়েছেন। কেন, সে প্রশ্নের উত্তরটা আমার জানা নেই।
অনুবাদকঃ
অনুবাদক আশিকুর রহমান তার তৃতীয় অনুবাদটি চমৎকার করেছেন, সেটা মানতেই হয়। আইন বিষয়ক কিছু জটিল কথাবার্তা আছে। সাধারণের তা মাথার ওপর দিয়ে যাবার কথা (আমার মতো)। তবে তার চমৎকার অনুবাদের কারণে সেটা নিয়ে কোনো ভাবনাই হয়নি। তবে কিছু টাইপো আর বানান ভুলের কথা না বললেই নয়। আশা করি সামনের কাজগুলো আরও ভালো করবেন। নিজেকে আরও ছাপিয়ে যাবেন।
কাগজ, বাঁধাই, প্রচ্ছদঃ
কাগজ ও বাঁধাই নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। চমৎকার বাঁধাই হয়েছে। কাগজের মানও ভালো।
প্রচ্ছদ করেছেন আদনান আহমেদ রিজন। কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেটাও হয়েছে নজরকাড়া।